কোরবানি: আত্মত্যাগ ও তাকওয়ার নিদর্শন
ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো কোরবানি। এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত এবং সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলমান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। কোরবানি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর শর্তহীন আনুগত্য, আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের মহান শিক্ষা বহন করে।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন:
"অতএব, আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।"
— সূরা কাওসার: ২
অন্যত্র এসেছে:
"(হে রাসূল!) আপনি বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মৃত্যু সবই আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব।"
— সূরা আনআম: ১৬২
কোরবানির মাংস বণ্টনের নিয়ম
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করা পশুর মাংস বণ্টনের একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করতেন:
1. এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য রাখতেন,
2. এক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন,
3. এক ভাগ দান করতেন নিঃস্ব ও মিসকিনদের মাঝে।
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকেও বর্ণিত হয়েছে, তিনি একইভাবে তিন ভাগ করতেন—নিজে খেতেন, প্রিয়জনদের খাওয়াতেন এবং মিসকিনদের দিতেন।
তাকওয়ার আসল পরীক্ষা
কোরবানির মূল উদ্দেশ্য শুধু পশু জবাই নয়; বরং এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি ভয়, আনুগত্য ও আত্মত্যাগের মনোভাব সৃষ্টি করা। এ কারণেই কোরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে:
"আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর গোশত কিংবা রক্ত পৌঁছায় না; বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।"
— সূরা হজ: ৩৭